ডারময়েড সিস্ট (Dermoid Cyst)

ডারময়েড সিস্ট (Dermoid Cyst)

ডারময়েড সিস্ট (Dermoid Cyst) একটি ধরনের বেনাইন (নিরীহ) টিউমার, যা সাধারণত শরীরের ত্বকের নিচে, ডিম্বাশয় (ovary), মেরুদণ্ড, বা চোখের আশেপাশে গঠিত হয়। এটি এক ধরনের টেরাটোডারমাল টিউমার যা বিভিন্ন ধরনের টিস্যু যেমন চুল, দাঁত, ত্বক, এবং ফ্যাট ধারণ করতে পারে।

** সাধারণ লক্ষণ:
1. চোখ বা ত্বকের নিচে:
• ফোলা বা শক্ত গিঁটের মতো অনুভব হয়।
• ব্যথা বা অস্বস্তি সাধারণত থাকে না।
2. ডিম্বাশয়ে (Ovarian Dermoid Cyst):
• তলপেটে ব্যথা।
• মাসিকের অনিয়ম।
• ফোলাভাব বা অস্বস্তি।
3. মেরুদণ্ডে:
• পিঠে ব্যথা।
• নার্ভ সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে।

** ডারময়েড সিস্টের ধরণ:

ডারময়েড সিস্ট বিভিন্ন স্থানে হতে পারে, যার মধ্যে প্রধান কিছু উল্লেখযোগ্য:

ক) ডিম্বাশয়ে ডারময়েড সিস্ট (Ovarian Dermoid Cyst):
• অবস্থান: ডিম্বাশয়ে (ovary) গঠিত হয়।
• লক্ষণ:
• তলপেটে ব্যথা।
• গ্যাস বা ফোলাভাব।
• মাসিকের সমস্যা।
• কিছু ক্ষেত্রে সিস্ট ফেটে গেলে জরুরী চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

খ) ত্বকের নিচে (Cutaneous Dermoid Cyst):
• অবস্থান: সাধারণত মাথার তালু, চোখের আশেপাশে, বা নাকের কাছে।
• লক্ষণ:
• একটি ছোট ফোলা গিঁট যা স্পর্শ করলে নরম বা শক্ত অনুভূত হয়।
• তেমন ব্যথা হয় না।

গ) মেরুদণ্ডের (Spinal Dermoid Cyst):
• অবস্থান: মেরুদণ্ডের আশেপাশে।
• লক্ষণ:
• পিঠে ব্যথা।
• চলাফেরায় সমস্যা।
• নার্ভের সমস্যা।

** ডারময়েড সিস্ট কেন হয়?

ডারময়েড সিস্ট সাধারণত জন্মগত হয়। গর্ভাবস্থার সময় শিশুর টিস্যু বিকাশের সময় ত্বক, চুল, দাঁত, বা অন্যান্য কোষগুলো সঠিকভাবে আলাদা না হলে এই সিস্ট তৈরি হতে পারে।

** ডারময়েড সিস্টের পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
• আল্ট্রাসাউন্ড (Ultrasound): সিস্টের অবস্থান ও গঠন জানতে।
• সিটি স্ক্যান (CT Scan): গভীর সিস্ট নির্ণয়ে।
• এমআরআই (MRI): মেরুদণ্ড বা ডিম্বাশয়ের সিস্ট বিশ্লেষণে।

** ডারময়েড সিস্টের চিকিৎসা:

ক) ছোট সিস্ট:

যদি সিস্ট ছোট হয় এবং কোনো সমস্যা না করে, তবে চিকিৎসক পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

খ) অস্ত্রোপচার:
1. ল্যাপারোস্কোপি:
• আধুনিক পদ্ধতি, ছোট কাটের মাধ্যমে সিস্ট সরানো হয়।
• সুস্থ হতে সময় কম লাগে।
2. খোলা অস্ত্রোপচার (Open Surgery):
• সিস্ট বড় হলে বা জটিল অবস্থায় প্রয়োগ করা হয়।

** ডারময়েড সিস্ট নিয়ে সতর্কতা:
• যদি সিস্ট থেকে ব্যথা, ফোলা, বা তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঘটে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
• ডিম্বাশয়ের সিস্ট ফেটে গেলে বা ঘুরে গেলে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম

এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)

মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি

পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)

নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ

সহকারী অধ্যাপক

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।

Hotline: 01777331511

www.drnazmulislam.com

চেম্বারঃ ১

অ্যালায়েন্স হসপিটাল লিমিটেড

২৪/৩ খিলজী রোড (রিং রোড)

শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

রুগি দেখার সময়ঃ বিকাল ৫:০০ – সন্ধ্যা ৭: ০০টা।

(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

শিশুর কান পাকা রোগ (Otitis Media)

শিশুর কান পাকা রোগ (Otitis Media)

শিশুর কান পাকা রোগ (Otitis Media with Effusion বা মধ্যকর্ণে প্রদাহ) একটি সাধারণ সমস্যা, যা বিশেষ করে ছোট শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। এটি মূলত মধ্যকর্ণে (কানের পর্দার পেছনের অংশ) তরল জমা হওয়ার কারণে হয় এবং কখনও কখনও এটি ব্যথা বা সংক্রমণের কারণ হতে পারে।

লক্ষণসমূহ:
1. কান থেকে পুঁজ বা তরল বের হওয়া
2. কানের ব্যথা
3. শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া
4. জ্বর
5. শিশু কান টানতে বা ঘষতে পারে
6. অস্বস্তি বা ঘুমাতে অসুবিধা

কারণসমূহ:
• সর্দি বা ঠান্ডা থেকে সংক্রমণ
• ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ
• মধ্যকর্ণে তরল জমে যাওয়া
• এলার্জি

চিকিৎসা:
1. চিকিৎসকের পরামর্শ:
কানের যেকোনো সংক্রমণে প্রথমেই একজন ইএনটি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
2. ওষুধ:
• ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন দেওয়া যেতে পারে।
• প্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হতে পারে।
3. কানের যত্ন:
• শিশুর কান কখনো খোঁচানো যাবে না।
• পানিতে কানের ভেতর পানি ঢোকা বন্ধ করতে হবে।
4. কানে পুঁজ বের হলে:
• পরিষ্কার তুলা দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে।
• নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রতিরোধের উপায়:
• শিশুদের ঠান্ডা বা সর্দি-কাশি থেকে রক্ষা করা।
• সঠিক টিকা দেওয়া।
• শিশুকে ধূমপানের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখা।

যদি লক্ষণগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা শিশুর স্বাভাবিক আচরণে পরিবর্তন দেখা দেয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস, এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং ( BSMMU )
শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ ও শিশু ইউরোলোজিস্ট
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com
https://youtube.com/@drnazmulislam

চেম্বারঃ ১
অ্যালায়েন্স হসপিটাল লিমিটেড
২৪/৩ খিলজী রোড (রিং রোড)
শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭
রুগি দেখার সময়ঃ বিকাল ৫:০০ – সন্ধ্যা ৭: ০০টা।
(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

#শিশু_সার্জারি #শিশু_ইউরোলজি #নাজমুল #pediatric_surgeon #pediatric_urology #শিশু_সার্জন

নবজাতকের নাভির যত্ন

নবজাতকের নাভির যত্ন নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি নবজাতকের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয়। নাভির যত্ন নেওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা নিচে দেওয়া হলো:

১. পরিষ্কার রাখুন
• নাভি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত তা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
• গরম পানিতে ভেজানো নরম কাপড় বা তুলা দিয়ে নাভি পরিষ্কার করুন। এরপর নরম তোয়ালে দিয়ে শুকিয়ে নিন।
• সাবান বা অ্যান্টিসেপটিক ব্যবহার না করাই ভালো, যদি না ডাক্তার পরামর্শ দেন।

২. শুকনো রাখুন
• নবজাতকের নাভির চারপাশে বেশি প্যাডিং বা কাপড় না রাখুন।
• নাভিতে পানি ঢালার প্রয়োজন নেই। গোসল করানোর সময় নাভি ভেজে গেলে দ্রুত শুকিয়ে নিন।

৩. ডায়াপার ঠিকভাবে ব্যবহার করুন
• ডায়াপার নাভি থেকে নিচে বাঁধুন যাতে নাভি পরিষ্কার ও শুষ্ক থাকে।
• নাভি ভিজে গেলে বা ময়লা হলে তা সঙ্গে সঙ্গে পরিষ্কার করুন।

৪. নাভি পড়ে গেলে খেয়াল রাখুন
• নাভির গোড়াটি সাধারণত ১-৩ সপ্তাহের মধ্যে পড়ে যায়।
• পড়ে যাওয়ার পরও নাভি শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত যত্ন নিতে হবে।

৫. সংক্রমণের লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করুন

নাভির চারপাশে যদি নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়, তবে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন:
• লালচে হওয়া বা ফোলা।
• দুর্গন্ধ বের হওয়া।
• পুঁজ দেখা।
• নবজাতকের জ্বর বা অস্বাভাবিক আচরণ।

৬. অতিরিক্ত কিছু করবেন না
• নাভিতে তেল, পাউডার বা অন্য কোনো কিছু লাগাবেন না, যদি না ডাক্তার পরামর্শ দেন।
• নাভি টানাটানি করবেন না। এটি স্বাভাবিকভাবে পড়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।

নাভির সঠিক যত্ন নবজাতকের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং তাদের সুস্থ রাখবে।


ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস, এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং ( BSMMU )
শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ ও শিশু ইউরোলোজিস্ট
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com
https://youtube.com/@drnazmulislam

চেম্বারঃ ১
অ্যালায়েন্স হসপিটাল লিমিটেড
২৪/৩ খিলজী রোড (রিং রোড)
শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭
রুগি দেখার সময়ঃ বিকাল ৫:০০ – সন্ধ্যা ৭: ০০টা।
(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

চেম্বারঃ ২
ট্রমা সেন্টার
২২/৮/এ মিরপুর রোড, শ্যামলী , ঢাকা।
রুগি দেখার সময়ঃ দুপুর ২:০০ – দুপুর ৩:০০ টা।
(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

অন্ডকোষে কেন ব্যথা হয়?

অন্ডকোষে ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি হালকা থেকে তীব্র হতে পারে এবং কখনও কখনও চিকিৎসা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। নিচে কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ তুলে ধরা হলো:

১. আঘাত বা চোট
• অন্ডকোষে কোনো সরাসরি আঘাত বা আঘাতজনিত কারণে ব্যথা হতে পারে।
• খেলাধুলা, দুর্ঘটনা, বা চাপ প্রয়োগের কারণে এটি সাধারণ।

২. অন্ডকোষের টর্সন (Testicular Torsion)
• অন্ডকোষ ঘুরে গিয়ে রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করলে এটি ঘটে।
• এটি অত্যন্ত তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করে এবং দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।

৩. এপিডিডাইমাইটিস (Epididymitis)
• অন্ডকোষের পেছনের টিউব (এপিডিডাইমিস) সংক্রমণ বা প্রদাহ হলে ব্যথা হয়।
• এটি যৌনবাহিত রোগ (যেমন, ক্ল্যামিডিয়া) বা প্রস্রাবের সংক্রমণের কারণে হতে পারে।

৪. হার্নিয়া (Inguinal Hernia)
• পেটের কোনো অঙ্গ নিচে নেমে এসে অন্ডকোষে চাপ সৃষ্টি করলে ব্যথা হতে পারে।

৫. কিডনির পাথর
• কিডনির পাথরের কারণে তলপেট থেকে অন্ডকোষে ব্যথা ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৬. হাইড্রোসিল বা ভারিকোসিল
• হাইড্রোসিল: অন্ডকোষে পানি জমে গেলে অস্বস্তি ও ব্যথা হতে পারে।
• ভারিকোসিল: শিরায় ফোলাভাব দেখা দিলে অন্ডকোষে ভারী অনুভূতি ও ব্যথা হয়।

৭. অণ্ডথলির সংক্রমণ (Orchitis)
• ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ অন্ডকোষে প্রদাহ সৃষ্টি করে।

৮. টিউমার বা ক্যান্সার
• যদিও এটি বিরল, তবে অন্ডকোষের টিউমার বা ক্যান্সারও ব্যথার কারণ হতে পারে।

করণীয়:

১. চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
• যদি ব্যথা তীব্র হয়, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে কমে না, বা ফুলে যায়, দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান।

২. প্রাথমিক পরিচর্যা:
• অন্ডকোষে হালকা ঠাণ্ডা প্যাক ব্যবহার করুন।
• আরামদায়ক অন্তর্বাস পরুন যা অন্ডকোষকে সঠিকভাবে সাপোর্ট দেয়।

৩. ওষুধ ও পরীক্ষা:
• সংক্রমণ থাকলে চিকিৎসক এন্টিবায়োটিক দিতে পারেন।
• আলট্রাসাউন্ড বা অন্যান্য পরীক্ষা করা হতে পারে সঠিক কারণ নির্ণয়ের জন্য।

যে কোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা করানো গুরুত্বপূর্ণ।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম

এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)

মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি

পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)

নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ 

সহকারী অধ্যাপক

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।

Hotline: 01777331511

www.drnazmulislam.com

কিডনিতে পানি জমা

কিডনিতে পানি জমা

কিডনিতে পানি জমা (যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় হাইড্রোনেফ্রোসিস বলা হয়) হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে কিডনির ভেতরে মূত্র জমে ফুলে যায়। এটি মূত্র প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে ঘটে।

কিডনিতে পানি জমার কারণ :

১. মূত্রনালীর বাধা:

  • কিডনির পাথর: কিডনি বা মূত্রনালীর মধ্যে পাথর থাকলে মূত্রের প্রবাহ আটকে যায়।
  • প্রোস্টেট গ্রন্থি বৃদ্ধি (পুরুষদের ক্ষেত্রে): প্রোস্টেট বড় হলে মূত্র প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ইউরেটার অবস্ট্রাকশন: ইউরেটার (কিডনি থেকে মূত্রাশয়ে যাওয়ার নালি) সরু হয়ে গেলে বা বন্ধ হলে মূত্র জমতে পারে।

২. ইনফেকশন বা প্রদাহ:

  • মূত্রনালীর সংক্রমণ (UTI) কিডনির কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে।
  • কিডনিতে কোনো প্রদাহ হলে মূত্র ঠিকভাবে বের হতে পারে না।
  1. প্রসবকালীন বা জন্মগত ত্রুটি:
  • শিশুর কিডনিতে জন্মগত কোনো ত্রুটি থাকলে হাইড্রোনেফ্রোসিস হতে পারে।
  1. টিউমার বা ক্যান্সার:
  • মূত্রাশয়, ইউরেটার বা কিডনিতে টিউমার থাকলে মূত্রনালী চেপে ধরা বা ব্লক হতে পারে।
  1. রিফ্লাক্স (Vesicoureteral reflux):
  • মূত্র বিপরীত দিকে কিডনিতে ফিরে এলে পানি জমতে পারে।

লক্ষণ

  • কোমর বা পিঠের নিচে ব্যথা।
  • মূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়া।
  • বমি বমি ভাব বা বমি।
  • জ্বর (ইনফেকশনের কারণে)।
  • প্রস্রাব করার সময় ব্যথা।
  • প্রস্রাবে রক্ত বা তীব্র দুর্গন্ধ।

পরীক্ষা এবং নির্ণয়

ডাক্তার নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করতে পারেন:

  1. আল্ট্রাসাউন্ড: কিডনিতে ফোলাভাব আছে কিনা তা শনাক্ত করার জন্য।
  2. CT স্ক্যান বা MRI: কিডনি ও মূত্রনালীর স্পষ্ট চিত্র পেতে।
  3. মূত্র পরীক্ষা: সংক্রমণ বা প্রদাহ আছে কিনা তা নির্ণয় করতে।
  4. রেনাল ফাংশন টেস্ট: কিডনির কার্যক্ষমতা মূল্যায়নের জন্য।

চিকিৎসা পদ্ধতি

কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ভর করে:

  1. কিডনির পাথর:
  • ছোট পাথর হলে প্রচুর পানি পান করলে মূত্রের মাধ্যমে বের হয়ে যেতে পারে।
  • বড় পাথরের জন্য লিথোট্রিপসি (সাউন্ড ওয়েভ) বা অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হতে পারে।
  1. ইনফেকশন:
  • অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
  1. বাধা অপসারণ:
  • ইউরেটার স্টেন্ট বা ক্যাথেটার বসিয়ে মূত্র প্রবাহ পুনরুদ্ধার করা হয়।
  1. জন্মগত ত্রুটি:
  • শিশুর ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • পর্যাপ্ত পানি পান করা।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য এড়ানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
  • প্রস্রাব আটকে না রাখা।
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ হলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া।

কিডনিতে পানি জমে থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি দীর্ঘমেয়াদে কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট করতে পারে।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম

এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)

পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং (ইন্ডিয়া)

ইউরোলজি ট্রেনিং ( BSMMU )

সহকারী অধ্যাপক

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।

Hotline: 01777331511

www.drnazmulislam.com

শিশুর গ্যাজ রোগ বা এনাল ফিশার

শিশুর গ্যাজ রোগ বা এনাল ফিশার

শিশুর গ্যাজ রোগ বা এনাল ফিশার হলো মলদ্বারের চারপাশে ত্বকের ফেটে যাওয়া বা ক্ষত হওয়ার একটি অবস্থা। এটি সাধারণত মলত্যাগের সময় ব্যথা, অস্বস্তি, এবং রক্তপাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

 

শিশুদের মধ্যে এনাল ফিশার কেন হয়?

 

১. কঠিন মল (কোষ্ঠকাঠিন্য): কঠিন বা বড় আকারের মল ত্যাগ করার কারণে মলদ্বারের ত্বক ফেটে যেতে পারে।

২. ডায়রিয়া: ঘন ঘন পাতলা মল ত্যাগ করলে মলদ্বারের চারপাশে জ্বালা বা ফাটল দেখা দিতে পারে।

৩. মলদ্বারে চুলকানি: অতিরিক্ত চুলকানি বা ঘষার কারণে ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

৪. আঘাত: শিশুদের মলদ্বারে কোনো আঘাত লাগলে ত্বক ফেটে যেতে পারে।

 

লক্ষণ

 

  • মলত্যাগের সময় বা পরে ব্যথা।
  • মলের সঙ্গে সামান্য তাজা রক্ত (লাল রঙের)।
  • মলদ্বারের আশপাশে ফাটল বা ক্ষত।
  • বাচ্চার কান্না বা অস্বস্তি (বিশেষত মলত্যাগের সময়)।

 

প্রাথমিক চিকিৎসা

 

১. কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করা:

  • শিশুকে বেশি করে তরল খাওয়ান।
  • ফল এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন (যদি বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হয়)।

 

২. উষ্ণ পানির সিটজ বাথ:

  • মলদ্বারের চারপাশ পরিষ্কার রাখতে এবং ব্যথা কমাতে দিনে ২-৩ বার উষ্ণ পানিতে শিশুকে বসান।

 

৩. মল নরম করার ওষুধ:

  • ডাক্তারের পরামর্শে ল্যাক্সেটিভ বা মল নরম করার ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

৪. মলদ্বার পরিষ্কার রাখা:

  • প্রতিবার মলত্যাগের পর শিশুর মলদ্বার হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
  • গ্লিসারিন বা শিশুদের জন্য নিরাপদ মলম ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি?

 

  • যদি ক্ষত কয়েক দিনের মধ্যেও ভালো না হয়।
  • যদি মলের সঙ্গে রক্ত বেশি বের হয়।
  • যদি শিশুর ক্ষত সংক্রমিত (লালচে, ফুলে যাওয়া বা পুঁজ) হয়।
  • যদি শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয়ে যায়।

 

ডাক্তার হয়তো বিশেষ মলম বা অ্যান্টিবায়োটিক দিতে পারেন এবং গুরুতর ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন।

 

পরামর্শ: শিশুদের মলত্যাগে স্বাভাবিক অভ্যাস বজায় রাখতে সঠিক খাবার এবং তরল গ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।