শিশুর হার্নিয়া (Hernia in children)

শিশুর হার্নিয়া শিশুর কুচকির হার্নিয়া Hernia in children

হার্নিয়া (Hernia)* হলো একটি শারীরিক অবস্থা যেখানে পেট বা উদরের ভিতরের অঙ্গ (যেমন অন্ত্র, চর্বি ইত্যাদি) পেশী বা কোষের দুর্বল স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসে এবং ত্বকের নিচে একটি ফোলা বা গোটা তৈরি করে। এটি সাধারণত কুচকি (Groin), নাভি (Belly button), বা অস্ত্রোপচারের দাগের কাছে দেখা যায়।

হার্নিয়ার প্রকারভেদ:

  1. ইনগুইনাল হার্নিয়া (Inguinal Hernia):
  • *সবচেয়ে সাধারণ, বিশেষত *পুরুষদের মধ্যে।
  • কুচকি বা অণ্ডকোষে ফোলা দেখা যায়।
  1. আম্বিলিক্যাল হার্নিয়া (Umbilical Hernia):
  • নাভির কাছে হয়, সাধারণত নবজাতক ও শিশুদের মধ্যে দেখা যায়।
  • বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিজে থেকেই সেরে যায় (৫ বছর বয়সের মধ্যে)।
  1. ফিমোরাল হার্নিয়া (Femoral Hernia):
  • মহিলাদের বেশি হয়, কুচকির নিচে ফোলা দেখা যায়।
  • ইনগুইনাল হার্নিয়ার চেয়ে জটিলতা বেশি।
  1. ইনসিশনাল হার্নিয়া (Incisional Hernia):
  • পূর্বের অস্ত্রোপচারের দাগে হয়।
  1. হাইটাল হার্নিয়া (Hiatal Hernia):
  • পাকস্থলীর অংশ ডায়াফ্রামের মাধ্যমে বুকের দিকে চলে আসে।

শিশুর কুচকির হার্নিয়া (Inguinal Hernia) একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে প্রিমাচিউর বা কম ওজনের শিশুদের ক্ষেত্রে। এটি যখন পেটের ভিতরের অংশ (যেমন অন্ত্র) কুচকির (Groin) এলাকায় চাপের কারণে বেরিয়ে আসে, তখন একটি নরম ফোলা দেখা দেয়।

কারণ:

  • জন্মগত ত্রুটি: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, জন্মের সময় পেট ও কুচকির মধ্যকার প্রাচীর দুর্বল থাকার কারণে হয় (প্রক্রিয়াটি সাধারণত জন্মের আগে বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু কিছু শিশুর তা হয় না)।
  • পুরুষ শিশুদের বেশি দেখা যায় (বিশেষত অণ্ডকোষে নামার সময়)।
  • মেয়েশিশুদেরও হতে পারে, তবে কম সাধারণ।

লক্ষণ:

  • কুচকিতে বা অণ্ডকোষে (ছেলেদের) নরম ফোলা, যা কাঁদলে বা চাপ দিলে বড় হয়, শুয়ে থাকলে ছোট হয়ে যায়।
  • ব্যথা বা অস্বস্তি (যদি হার্নিয়া আটকে যায়)।
  • বমি, খাওয়াতে অনীহা, ফোলা লাল হয়ে যাওয়া (জরুরি অবস্থা)।

ঝুঁকি:

  • ইনকারসারেশন বা স্ট্র্যাংগুলেশন (হার্নিয়া আটকে গেলে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে টিস্যু নষ্ট হতে পারে) – এটি একটি জরুরি অবস্থা, দ্রুত অস্ত্রোপচার প্রয়োজন।

চিকিৎসা:

  • অস্ত্রোপচার (হার্নিওরাফি): শিশুর হার্নিয়া সাধারণত নিজে থেকে সেরে না, তাই সার্জারি প্রয়োজন। এটি একটি রুটিন অপারেশন, সাধারণত ল্যাপারোস্কোপিক বা ওপেন পদ্ধতিতে করা হয়।
  • জরুরি অপারেশন: যদি হার্নিয়া আটকে যায় বা ব্যথা হয়।

কখন ডাক্তার দেখাবেন?

  • কুচকিতে ফোলা দেখলে।
  • শিশু অতিরিক্ত কাঁদলে, বমি করলে বা ফোলা লাল হলে।

মনে রাখবেন: শিশুর হার্নিয়া বড়দের মতো নয়, এটি সাধারণত জন্মগত এবং সময়মতো চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়। বাড়িতে কোনো চাপ দেওয়া বা হার্নিয়া ব্যান্ড ব্যবহার করবেন না। দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ বা পেডিয়াট্রিক সার্জনের পরামর্শ নিন।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস,  এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)
নবজাতক, শিশু-কিশোর সার্জারী বিশেষজ্ঞ 
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com

চেম্বারঃ
অ্যালায়েন্স হসপিটাল লিমিটেড
২৪/৩ খিলজী রোড (রিং রোড)
শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭
রুগি দেখার সময়ঃ বিকাল ৫:০০ – সন্ধ্যা ৭: ০০টা।
(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *