শিশুর পেটে কৃমি: কখন অপারেশন লাগতে পারে

শিশুর পেটের কৃমি কখন ভয়ংকর

শিশুর পেটে কৃমির সাধারণ চিকিৎসা হলো *ওষুধ (অ্যান্টিহেলমিন্থিক)* যেমন অ্যালবেন্ডাজোল বা মেবেন্ডাজোল। তবে কিছু জটিল ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার (অপারেশন) প্রয়োজন হতে পারে, যেমন:

### *কখন অপারেশন লাগতে পারে?*

*অন্ত্রে ব্লকেজ (Intestinal Obstruction):*

– যদি কৃমি (বিশেষ করে গোলকৃমি/Roundworm) এত বেশি সংখ্যায় জমে যে অন্ত্র আটকে যায়, তাহলে জরুরি অপারেশন প্রয়োজন হতে পারে।

*অ্যাপেন্ডিসাইটিসের মতো লক্ষণ (কৃমি দ্বারা অ্যাপেনডিক্স বন্ধ):*

– কৃমি অ্যাপেন্ডিক্সে ঢুকে ইনফেকশন বা ব্লকেজ সৃষ্টি করলে অপারেশন লাগতে পারে।

*পিত্তনালীতে কৃমি (Biliary Ascariasis):*

– কৃমি পিত্তনালী বা লিভারে ঢুকলে জন্ডিস, তীব্র ব্যথা বা ইনফেকশন হতে পারে, তখন অপারেশন বা এন্ডোস্কোপিক অপসারণ প্রয়োজন।

*অন্ত্র ফুটো (Perforation) বা গ্যাংগ্রিন:*

– কৃমির কারণে অন্ত্রে ফুটো বা রক্তক্ষরণ হলে জরুরি সার্জারি দরকার।

### *লক্ষণ যা জরুরি চিকিৎসা নির্দেশ করে:*

তীব্র পেটে ব্যথা ও ফুলে যাওয়া
অবিরাম বমি (বিশেষ করে সবুজ বা পিত্তবমি)
মলে রক্ত বা কালো পায়খানা
জ্বর ও পেট শক্ত হয়ে যাওয়া
দুর্বলতা বা শক (রক্তচাপ কমে যাওয়া)


### *প্রতিকার:*

নিয়মিত কৃমির ওষুধ খাওয়ান (বছরে ২ বার)।
স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন।
কাঁচা সবজি/ফল ভালোভাবে ধুয়ে খান।


*দ্রষ্টব্য:* শিশুর তীব্র লক্ষণ দেখা দিলে *অবিলম্বে ডাক্তারের শরনাপন্ন হোন*। সাধারণত কৃমির সমস্যা ওষুধে সেরে যায়, কিন্তু জটিল ক্ষেত্রে অপারেশনই শেষ উপায়।


ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস, এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)
শিশু সার্জারী ও শিশু ইউরোলোজি বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com

 

শিশুর কম ঘুম

শিশুর ঘুম কম হওয়ার কারণ

শিশুর ঘুম কম হওয়ার পিছনে বিভিন্ন শারীরিক, মানসিক ও পরিবেশগত কারণ থাকতে পারে। কিছু সাধারণ কারণ নিম্নরূপ:

✅️ *১. শারীরিক কারণ:*

– *ক্ষুধা:* নবজাতক বা ছোট শিশুরা প্রায়ই ক্ষুধার কারণে ঘুম থেকে জেগে ওঠে।
– *পেটের সমস্যা:* গ্যাস, কোলিক, রিফ্লাক্স বা কোষ্ঠকাঠিন্য ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
– *দাঁত ওঠা:* মাড়ি ব্যথা শিশুর ঘুম কমিয়ে দিতে পারে।
– *জ্বর/সর্দি-কাশি:* শারীরিক অসুস্থতা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়।
– *ভিটামিন বা মিনারেলের ঘাটতি:* যেমন আয়রন বা ভিটামিন ডি-এর অভাব।

✅️ *২. মানসিক ও বিকাশগত কারণ:*

– *বৃদ্ধি ও বিকাশের পর্যায়:* শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশের সময় ঘুমের প্যাটার্ন পরিবর্তন হতে পারে।
– *আবেগজনিত সমস্যা:* উদ্বেগ, ভয় বা অতিরিক্ত উত্তেজনা (যেমন নতুন কিছু শেখা) ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
– *অ্যাটেনশন সিকিং:* কিছু শিশু বেশি মনোযোগ পেতে রাতে জেগে থাকতে চায়।

✅️ *৩. পরিবেশগত কারণ:*

– *অতিরিক্ত গরম/ঠান্ডা:* অস্বস্তিকর তাপমাত্রা ঘুমে সমস্যা তৈরি করে।
– *আলো-শব্দ:* অতিরিক্ত আলো বা শোরগোল শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।
– *অস্বাস্থ্যকর ঘুমের রুটিন:* অনিয়মিত ঘুমের সময় বা রাত জাগার অভ্যাস।

✅️ *৪. অভ্যাসগত কারণ:*

– *দুধ বা দুধের বোতলের উপর নির্ভরতা:* কিছু শিশু ঘুমানোর জন্য দুধ/বোতলের উপর নির্ভরশীল হয়, যা ঘন ঘন জাগার কারণ হতে পারে।
– *মায়ের সঙ্গে বেশি নির্ভরতা:* কোলে বা বুকে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে স্বাধীনভাবে ঘুমানো কঠিন হতে পারে।

⭕️ *কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন?*

– যদি শিশু *অতিরিক্ত কান্না করে, **ওজন না বাড়ে, বা **শ্বাসকষ্ট* দেখা দেয়।
– ঘুমের সমস্যা *দীর্ঘদিন* চলতে থাকলে।
– শিশু *অস্বাভাবিকভাবে নিস্তেজ* বা *খুব বেশি বিরক্ত* হলে।

⭕️ *সমাধানের কিছু উপায়:*
– *নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন* (যেমন গোসল, গল্প বলা, হালকা ম্যাসাজ)।
– *শোবার ঘর শান্ত, অন্ধকার ও আরামদায়ক রাখুন*।
– *দিনের বেলা পর্যাপ্ত শারীরিক activity রাখুন* (যেমন খেলা, হাঁটা)।
– *রাতে ভারী খাবার বা ক্যাফেইন জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন* (বড় শিশুদের ক্ষেত্রে)।

শিশুর ঘুমের সমস্যা সাধারণত বয়সের সাথে কমে যায়, তবে সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং (ইন্ডিয়া)
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511
www.drnazmulislam.com

চেম্বারঃ
অ্যালায়েন্স হসপিটাল লিমিটেড
২৪/৩ খিলজী রোড (রিং রোড)
শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭
রুগি দেখার সময়ঃ বিকাল ৫:০০ – সন্ধ্যা ৭: ০০টা।
(শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিন)

#ঘুম #শিশু #যত্ন #drnazmul #ডাঃ_নাজমুল
#শিশু_সার্জন #শিশু_সার্জারি #শিশু_ইউরোলজি

শিশুর জিহবার জন্মগত সমস্যা

শিশুর জিহবার জন্মগত সমস্যা

শিশুর জিহ্বার জন্মগত সমস্যা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থায় বিকাশের সময় ঘটে। এগুলো জিহ্বার গঠন, আকার বা কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। কিছু সাধারণ জন্মগত জিহ্বার সমস্যা নিচে দেওয়া হলো:


১. জিহ্বা বাঁধা (Tongue-Tie বা Ankyloglossia)

  • বর্ণনা:
    জিহ্বার নিচের ফ্রেনুলাম (তন্তুময় টিস্যু) অতিরিক্ত শক্ত বা ছোট হওয়ায় জিহ্বা স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়া করতে পারে না।
  • লক্ষণ:
  • বুকের দুধ টানতে সমস্যা (শিশু ঠিকমতো চুষতে পারে না)।
  • বড় হলে কথা বলতে বা জিহ্বা বাইরে বের করতে অসুবিধা।
  • চিকিৎসা:
  • ফ্রেনোটমি: একটি ছোট সার্জারি করে ফ্রেনুলাম কাটা হয় (সাধারণত লেজার বা ডায়াথারমি দিয়ে)।
  • ব্যায়াম থেরাপি (জিহ্বার নড়াচড়া বাড়ানোর জন্য)।

২. ম্যাক্রোগ্লোসিয়া (বড় জিহ্বা, Macroglossia)

  • বর্ণনা:
    জিহ্বা স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয়, যা মুখের গঠন বা শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • কারণ:
  • জেনেটিক ডিসঅর্ডার (যেমন: ডাউন সিনড্রোম, বেকউইথ-ভাইডেম্যান সিনড্রোম)।
  • জন্মগত অস্বাভাবিকতা।
  • লক্ষণ:
  • মুখ সব সময় খোলা থাকা, লালা পড়া।
  • খাওয়া বা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট।
  • চিকিৎসা:
  • গুরুতর ক্ষেত্রে জিহ্বা ছোট করার অপারেশন (গ্লোসেক্টমি)।
  • স্পিচ থেরাপি বা অরথোডন্টিক চিকিৎসা (দাঁতের গঠন ঠিক করতে)।

৩. মাইক্রোগ্লোসিয়া (ছোট জিহ্বা, Microglossia)

  • বর্ণনা:
    জিহ্বা অস্বাভাবিকভাবে ছোট বা অনুন্নত হয়।
  • সমস্যা:
  • খাবার গিলতে বা কথা বলতে অসুবিধা।
  • চোয়ালের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
  • চিকিৎসা:
  • স্পিচ থেরাপি ও ফিজিক্যাল থেরাপি।
  • কিছু ক্ষেত্রে রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি।

৪. জিহ্বার বিভাজন (Bifid Tongue বা Forked Tongue)

  • বর্ণনা:
    জিহ্বার আগা দুটি ভাগে বিভক্ত (সাপের জিহ্বার মতো)।
  • কারণ:
  • জেনেটিক মিউটেশন বা নির্দিষ্ট সিনড্রোম (যেমন: অরোফেসিয়াল ডিজিজ)।
  • চিকিৎসা:
  • সাধারণত সমস্যা না করলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই।
  • কথা বলতে বা খেতে সমস্যা হলে প্লাস্টিক সার্জারি করা যেতে পারে।

৫. জিহ্বার গঠনগত বিকৃতি (Hypoglossia/Ag lossia)

  • বর্ণনা:
    জিহ্বা আংশিক বা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত।
  • সমস্যা:
  • শ্বাসনালী বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি, খাওয়ায় অসুবিধা।
  • চিকিৎসা:
  • বিশেষায়িত নিওনেটাল কেয়ার ও সার্জারি।

কখন ডাক্তার দেখাবেন?

  • শিশু বুকের দুধ টানতে না পারলে বা ওজন না বাড়লে।
  • জিহ্বা নীল বা সাদা হয়ে গেলে (অক্সিজেনের অভাব)।
  • শ্বাস নিতে কষ্ট বা মুখ দিয়ে শ্বাস নেওয়া।
  • জিহ্বা অতিরিক্ত বড়/ছোট বা বিভক্ত দেখালে।

প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনা

  • জন্মপূর্ব যত্ন: গর্ভাবস্থায় ফোলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট নেওয়া।
  • শিশুর মুখ পরীক্ষা: জন্মের পর জিহ্বা, তালু ইত্যাদি পরীক্ষা করা।

জন্মগত জিহ্বার সমস্যা প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করলে চিকিৎসা সহজ হয়, তাই সচেতনতা গুরুত্বপূর্ণ।

ডাঃ এস, এম, নাজমুল ইসলাম
এমবিবিএস, এমএস( শিশু সার্জারী)
মেম্বার হাইপোসপেডিয়াস ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি
পেডিয়েট্রিক ইউরোলজি ট্রেনিং(ইন্ডিয়া)
ইউরোলজি ট্রেনিং (BSMMU)
শিশু সার্জারী ও শিশু ইউরোলোজি বিশেষজ্ঞ
সহকারী অধ্যাপক
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট।
Hotline: 01777331511